কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬

যাবজ্জীবন সাজায় বন্দি থেকে মুক্তি পেলেন শতবর্ষী বৃদ্ধা অহিদুন্নেসা


এবিসি নিউজ
গাজীপুর

মুক্তি পেলেন শতবর্ষী বৃদ্ধা অহিদুন্নেসা। তিনি এক আলোচিত হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনা দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ২০ বছর কারাভোগ করেছেন। যাবজ্জীবন সাজার আদেশ বাতিল করে তাকে মুক্তির নির্দেশ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের আদেশের অনুমতি কারাগারে পৌঁছালে মঙ্গলবার গাজীপুর কাশিমপুর কারাগারের কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেন।

গাজীপুরের কাশিমপুর নারী কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা সাংবাদিকদের জানান, আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি যাচাই-বাছাই করে আজ বেলা ১২টায় অহিদুন্নেসাকে মুক্তি দেয়া হয়। এরপরই অহিদুন্নেসা শুকরিয়া আদায় করেন এবং প্রধান বিচারপতিসহ তার মুক্তির পেছনে যারা ভূমিকা রেখেছে তাদের জন্য দোয়া করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত মামলা এবং শত্রুতা থাকার কারণে ১৯৯৭ সালের ২৯ জুন রাতে চাঁদপুরের মতলব থানার জোরাখালী গ্রামের হযরত আলীসহ পরিবারের আট সদস্যকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় মতলব থানার হত্যা মামলায় ওই বছরই গ্রেফতার হন অহিদুন্নেছা। এরপর থেকেই তিনি কারাগারে বন্দী ছিলেন। 

চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ২০০০ সালের ১৪ মে চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অহিদুনেচ্ছাসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। বিচার চলাকালে মারা যান দুই আসামি। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আপিল করলে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি নিয়ে ২০০৪ সালের ৬ এপ্রিল হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সফিকুল ইসলাম ওরফে মন্টু ও ছালামত প্রধানিয়ার সাজা বহাল রাখা হয়। ছালামত প্রধানিয়া অহিদুন্নেছার স্বামী। খালাস পায় নয় আসামি। যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকে আলী হোসেন, অহিদুন্নেছা ও ভানু আক্তারের। 

যাবজ্জীবন সাজা বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ৪৭০ দিন পর লিভ টু আপিল করেন অহিদুন্নেছা। ২০০৭ সালের ১২ আগস্ট ওই আপিল খারিজ করে দেন তৎকালীন আপিল বিভাগ। ফলে তাকে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করতে হয়। 

গত ২৬ জুন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রিয় কারাগার পরিদর্শনকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অহিদুন্নেছাকে দেখতে পান। পরে শতবর্ষী অহিদুন্নেছার ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেন প্রধান বিচারপতি। এরপরই প্রধান বিচারপতি যাবজ্জীবন সাজার রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিলের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। 

২৯ জুন চিঠিতে অহিদুন্নেছা লিখেছেন, বর্তমানে ১০০ বছরের বৃদ্ধা আমি। আমার স্বামী, পুত্র, পুত্রবধূসহ পরিবারের ১১ জন সদস্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটি হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আমার পরিবারের সকল পুরুষ সদস্য জেলে থাকায় সময়মত আইনজীবী নিয়োগ করতে না পারায় আমার লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে যায়। আমি এখন চোখে কম দেখি। কারো সাহায্য ছাড়া চলতে পারি না। আমার পুত্রবধূ কারাগারে আমার দেখভাল করেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে আমি আপিল বিভাগের যাবজ্জীবন সাজা বহালের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ পিটিশন করতে চাই।

এরপরই কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা অহিদুন্নেছার রিভিউ করার আবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেন।

সোমবার রিভিউ পিটিশনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় আসে। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ যাবজ্জীবন সাজার রায় বাতিল করে তাকে অবিলম্বে কারামুক্তির নির্দেশ দেন বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬

কাশিমপুর কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশার মৃত্যু


এবিসি নিউজ
কাশিমপুর, গাজীপুর

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশা ওরফে পাশা (৪৫) মৃত্যু বরণ করেছেন। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে তার দেহত্যাগ হয়। কামাল পাশা টাঙ্গাইলের কালিহাতী থানার ঝাপড়াজান এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

কাশিমপুর কারাগার সূত্রে জানা যায়, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকাভুক্ত ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি কামাল পাশা ওরফে পাশা আজ সকালে হঠাৎ কারাভ্যন্তরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাঁকে কারা হাসপাতালে নেওয়া হলেও পরে সেখান থেকে তাঁকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, ২০০২ সালে গ্রেপ্তারের পর ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট পাশাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ স্থানান্তর করা হয়। রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর ও রমনা থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলা এবং তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলায় আদালত তাঁকে ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানার একটি ও তেজগাঁও থানার দুটি মামলা বিচারাধীন ছিল।